Thursday, September 20, 2018

Columbian Exchange




ক্রিস্টোফার কলম্বাস আমেরিকা মহাদেশ আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত ইউরোপ বা এশিয়ার বা আফ্রিকার মানুষ ভুট্টা কি জিনিস,
খায় নাকি মাথায় দেয় !!
সেটা জানতো না...

ভুট্টা ছিল আমেরিকা উপমহাদেশের আদি অধিবাসীদের অন্যতম প্রধান খাদ্য...
কেবল ভুট্টা নয়...
সুন্দর সুন্দর লাল লাল টমেটো খেতে কত ভালোই না লাগে... এই টমেটো আমেরিকা উপমহাদেশ (উত্তর+দক্ষিন আমেরিকা) আবিষ্কারের পর এসেছে...
প্রথমে লাল লাল টমেটো দেখে ইউরোপিয়ানরা ভেবেছিলো, হয়ত বিষাক্ত কিছু হবে...

যারা 'বাদশাহনামদার' পড়েছেন, তারা মরিচের ব্যাপারটা জানেন। কাচা মরিচও এসেছে আমেরিকা উপমহাদেশ থেকে। মোঘল সম্রাট বাবর বা মঙ্গল সম্রাট চেঙ্গিস খানও মরিচ খেতে পারেননি। তাদের রান্নাবান্না হইতো গোল মরিচ দিয়ে...

আলু... এই আলু না হলে আমাদের এখন চলেই না। অথচ এই আলু ছিল ইনকা'দের খাবার... দক্ষিন আমেরিকা থেকে কেবল কচুরি পানা নয়, আলুও এসেছে...
পিন্যাট, মিষ্টি কুমড়া, সিম (সিমের বিচি অনেক সুস্বাদু) ... এমনকি চলকেটের cacao beans ...
এসব আমরা পেয়েছি আমেরিকা আবিষ্কারের পর...
"আমরা" বলতে বোঝাচ্ছি, Old World অর্থাৎ ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকা, এসব মহাদেশের মানুষদের...

ওদিকে আমেরিকা উপমহাদেশের কোথাও তখনও গরু, ছাগল, ঘোড়া, শুকর, ভেড়া, এসবকিছু ডমেস্টিকেশন করা হয়নি...
অবশ্য হবে কিভাবে...
আমেরিকাতে ঘোড়া ছিল না। গাধা ছিল না। ছিল বাইসন... বাইসন আবার আটল্যান্টিকের এপাশে পাওয়া যেত না।
ছিল না গরু... ছিল না ছাগল...
মুরগী কিছু ছিল.. কিছু ফসিল ইদানিং পাওয়া গেছে... . কিন্তু মুরগী পালন হইতো না।
আমেরিকা উপমহাদেশের নাম্বার ওয়ান গৃহপালিত পশু ছিল Llama
লামা অনেকটা ছাগলের মতই...
লামা'র পিঠে চড়া যায় না,
লামা হালও টানতে পারে না।
ইউরোপ এশিয়ার চাষাবাদের সাথে এজন্য আদি আমেরিকার মানুষের চাষাবাদের পদ্ধতিতে আকাশ পাতাল ব্যবধান ছিল...

আমেরিকা আবিষ্কারের পর একটা দীর্ঘ সময় ইউরোপিয়ানরা কাঠের চাহিদা মিটিয়েছে আমেরিকা উপমহাদেশের গাছ পালা দিয়ে।
কাঠ তখন ছিল ইউরোপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি।

আমাদের সিভিলাইজেশনের সাথে আমেরিকা মহাদেশের সিভিলাইজেশনের কার্যত আগে কোনো কানেকশন ছিল না। বা ছিল বলে জানা নেই।
ওদের সভ্যতা স্বতন্ত্রভাবেই গড়ে উঠেছিল।
আর আগেই বললাম, আমেরিকা মহাদেশে ঘোড়া ডমেস্টিকেশন করা হয়নি তখনও।
সুতরাং পরিবহন ব্যবস্থাতে ওরা ছিল অনেক পিছিয়ে। আর একারণে খোদ উত্তর আমেরিকার সিভিলাইজেশনগুলোর সাথে দক্ষিন আমেরিকার অনেক সিভিলাইজেশনের ভেতর কানেকশনও ছিল একেবারেই কম...

ইউরোপিয়ানরা আমেরিকাতে গম চাষাবাদ শুরু করে। আজ গাঁজা চাষ হয় দক্ষিন আমেরিকার সর্বত্র... এই গাঞ্জা চাষ আমেরিকাতে শুরু করেছিল ইউরোপিয়ানরাই।
ওদিকে আমেরিকা থেকে ইউরোপ পেয়েছিল টোবাকো...
প্রযুক্তি ও জ্ঞান বিজ্ঞানে উন্নত ইউরোপিয়ানরা সহজেই পেরেছিলো নেটিভদের স্লেভ বানিয়ে টোবাকো, আখ আর তুলার ক্ষেতে খাটাতে।

ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা যে Quinine ব্যবহার করা হয়, সেটা প্রথম পাওয়া গিয়েছিল cinchona গাছ থেকে। এটা গাছ আমেরিকাতে পাওয়া যেত।
ইন্টারেস্টিং বিষয় হল, রোগের মেডিসিন আটল্যান্টিকের ওপাড়ে ছিল। আর রোগটা ছিল কিন্তু এপাড়ে।
রোগের মেডিসিনের এক্সচেঞ্জ যেমন হয়েছিল, রোগেরও তো হয়েছিল। আর আদি আমেরিকানদের কাছে ম্যালেরিয়া রোগের কোনো চিকিৎসা ছিল না। প্রচুর মানুষ মরেছিল ম্যালিরিয়া সহ নানান রোগ ভুগে।
তবে অসুখ বিসুখের কথা যখন আসলো, তখন বলি সিফিলিসের কথা। এই ভয়াবহ রোগটা কলম্বিয়ান এক্সেঞ্জের আগে ইউরোপিয়ানদের কাছে অপরিচিত ছিল। এই রোগ এসেছিলো আমেরিকা থেকে।

আজ যে টার্কি (মোরগের মত) আমাদের দেশেও পালন করা হচ্ছে, এই টার্কি কিন্তু তুরস্ক থেকে নয়, বরং এই টার্কি এসেছিল আমেরিকা থেকে।
মেক্সিকানরা প্রথম টার্কি ডমেস্টিকেট করেছিল।

প্লেগ, চিকেনপক্স, ম্যালেরিয়া, কলেরা, এসব ভয়াবহ রোগ বালায়ের তেমন কোনো চিকিৎসা আদি আমেরিকানরা জানতো না। এসব রোগ তাদের ছিল না। ইউরোপিয়ানরা আমেরিকায় গেলে এসব রোগ ছড়িয়ে পড়ে। ফলে আদি আমেরিকানদের একটা বড় অংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল এসব রোগ ব্যাধি মহামারিতে।

reference:
https://en.wikipedia.org/wiki/Columbian_exchange
https://newsmaven.io/indiancountrytoday/archive/10-indigenous-foods-thought-to-be-european-uTmaPLGaLUa33WWgvgmSVQ/

No comments:

Post a Comment

Note: Only a member of this blog may post a comment.